এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন-
فَإِذَا أَفَضْتُمْ مِّنْ عَرَفُتٍ فَاذْكُرُوا اللهَ عِنْدَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ ) وَاذْكُرُوهُ كَمَا هَدَاكُمْ ، وَإِنْ كُنتُمْ مِّنْ قَبْلِهِ لَمِنَ الضَّالِّينَ.
অর্থ : অতঃপর যখন তোমরা আরাফাত থেকে (তওয়াফে জিয়ারতের জন্য। ফিরে আসবে, তখন মাশআরে হারামের নিকটে আল্লাহকে স্মরণ কর। আর তিনি যেভাবে তোমাদের হেদায়াত দিয়েছেন সেভাবে তাকে স্মরণ কর। যদিও এর আগে তোমরা (বিশুদ্ধ পন্থা সম্পর্কে) ছিলে সম্পূর্ণ অজ্ঞ।
মুজদালিফায় রাতে বেশি বেশি জিকির, দুআ ও কুরআন তেলাওয়াত করবে। কারণ, এটি মহান রাত, যেমনটি পূর্বে বলা হয়েছে।
মুজদালিফায় নিম্নোক্ত দুআ পড়বে-
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা কামা ওয়াকাফতানা ফিহি ওয়া আরাইতানা ইয়্যাহু, ফা ওয়াফফিকনা লি যিকরিকা কামা হাদাইতানা ওয়াগফির লানা ওয়ার হামনা কামা ওয়াআদতানা বিকাওলিকা, ওয়া কাওলুকাল হাক্কু: ফা ইজা আফাদতুম মিন আরাফাতিন ফাজকুরুল্লাহা ইনদাল মাশআরিল হারামি ওয়াজকুরুহু কামা হাদাকুম, ওয়া ইন কুনতুম মিন কাবলিহি লামিনাদ্দাল্লিন। ছুম্মা আফিদু মিন হাইসু আফাদান্নাসু ওয়াসতাগফিরুল্লাহ, ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রাহিম।
অর্থ: হে আল্লাহ! যেভাবে আমাদেরকে সেখানে অবস্থান করিয়েছেন এবং সে স্থান দেখার সুযোগ দিয়েছেন। সুতরাং আপনার দেখানো পদ্ধতিতে আপনাকে স্মরণ করার তাওফিক দান করুন। আমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন, যেমনটা আপনি কালামে পাকে ওয়াদা করেছেন, আর আপনার ওয়াদা সত্য অতঃপর যখন তোমরা আরাফাত থেকে (তওয়াফে জিয়ারতের জন্য) ফিরে আসবে, তখন মাশআরে হারামের নিকটে আল্লাহকে স্মরণ কর।
আর তিনি যেভাবে তোমাদিগকে হেদায়াত দিয়েছেন সেভাবে তাকে স্মরণ কর। যদিও ইতোপূর্বে তোমরা (বিশুদ্ধ পন্থা সম্পর্কে) ছিলে অজ্ঞ। অতঃপর ফিরে এসো যেখান থেকে সমস্ত লোক ফিরে আসে। আর (আরাফায় আল্লাহর কাছে পাপ মার্জন করাও। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ক্ষমাকারী বড় করুণাময়।
বেশি বেশি এ দুআও পড়বে
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ.
উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনয়া হাসানাতান, ওয়াফিল আখিরমি হাসানাতান, ওয়া কিনা আজাবান্নার। অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ দান করু আমাদেরকে জাহান্নামের শান্তি থেকে রক্ষা করুন। -এই দুআগুলোও মুসতাহাব-
اللهمَّ لَكَ الْحَمْدُ كُلُّهُ، وَلَكَ الْكَمَالُ كُلُّهُ، وَلَكَ الْجُلال كُلُّهُ، وَلَكَ الْتَقْدِيسُ كُلُّه اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي جَمِيعَ مَا أَسْلَفْتُهُ وَاعْصِمُنِي فِيمَا بَقِي وَارْزُقْنِي عَمَلًا صَالِحًا تَرْضَى بِهِ عَلَى
يَا ذَا الْفَضْلِ الْعَظِيمِ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু কুলুহু, ওয়ালাকাল কামালু কুলুহু ওয়া লাকাল জালালু কুলুহু, ওয়া লাকাত্তাকদিসু কুলুহ। আল্লাহুম্মাগফিরলি যামিনা মা আসলাফতুহু, ওয়াসিমনি ফিমা বাকিয়া, ওয়ারজুকনি আমালান সালিহান তারদা বিহি আন্নি ইয়া জাল ফাদলিল আজিম।
অর্থ: হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা, সকল পূর্ণাঙ্গতা, সকল বড়ত্ব ও সকল পবিত্রয় আপনারই। হে আল্লাহ! আমার পূর্বের সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করুন। ভবিষ্যতে হেফাজত করুন। এমন সৎ আমলের তাওফিক দিন, যদ্দারা আপনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হন হে মহা অনুগ্রহশীল।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَشْفِعُ إِلَيْكَ بِخَوَاصَّ عِبَادِكَ، وَأَتَوَسَّلُ بِكَ إِلَيْكَ، أَسْأَلُكَ أَنْ تَرْزُقَنِي جَوَامِعَ الْخَيْرِ كُلِهِ، وَأَنْ تَمُنَّ عَلَيَّ بِمَا مَنَتَ بِهِ عَلَى أَوْلِيَائِكَ، وَأَنْ تُصْلِحَ حَالِي لَا الْآخِرَةِ وَالدُّنْيَا يَا أَرْحَمَالرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসতাশফিউ ইলাইকা বি খাওয়াসস্য ইবাদিকা, ওয়া আতাওয়াসসালু বিকা ইলাইক। আসআলুকা আন তারজুকানি যাওয়ামিআল খাইরি কুল্লিহি, ওয়া আন তামুন্না আলাইয়্যা বিমা মানানতা বিহি আলা আউলিয়াদায়িতক। ওয়া আন তুসলিহা হালি ফিল আখিরাতি ওয়াদ্দুনয়া ইয়া আরহামার রাহিমিন।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার নেক বান্দাদের ওসিলায় আপনার কাছে সুপারিশ করছি, আপনার (আসমায়ে হুসনার) মাধ্যমে আপনার কাছে মিনতি করছি। আপনার কাছে প্রার্থনা করি যেন আমাকে সমন্বিত সমুদয় কল্যাণ দান করেন। আমার ওপর সেই দয়া করেন, যা আপনার প্রিয় বান্দাদের ওপর করে থাকেন। আর ইহকাল-পরকালে আমার অবস্থা শ্রেয়তর করে দেন হে সর্বোচ্চ দয়াবান।
মাশআরে হারাম থেকে মিনার দিকে যাওয়ার সময় যে দুআ
গড়বে এখন ফজরের আলো ছড়িয়ে পড়ে তখন মাশআরে হারাম থেকে মিনার দিকে যাবে। এ সময় বেশি বেশি তালবিয়া জিকির ও দুআ পড়বে। বেশি বেশি তালবিয়া পড়বে। কেননা এটাই তালবিয়া পড়ার শেষ সময়। হতে পারে জীবনে আর তালবিয়া পড়ার সুযোগ হবে না।
ঈদের দিন মিনাতে যে দুআ পড়বে মিনায় পৌছে এ দুআ পড়বে-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي بَلَغَنِيْهَا سَالِمًا مُعَافَى اللَّهُمَّ هَذِهِ مِنَى قَدْ أَتَيْتُهَا، وَأَنَا عَبْدُكَ، وَفِي قَبْضَتِكَ أَسْأَلُكَ أَنْ تَمُنَّ عَلَيَّ بِمَا مَنَسْتَ بِهِ عَلَى أَوْلِيَائِكَ، اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَمِنْ الْحِرْمَانِ وَالْمُصِيبَةِ فِي دِينِي يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ.
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি বাল্লাগানিহা সালিমান মুআফা। আল্লাহুম্মা হাজিহি মিনা কাদ আতাইতুহা, ওয়া আনা আবদুকা ওয়াফি কাবদাতিকা, আসআলুকা আন তামুন্না আলাইয়্যা বিমা মানানতা বিহি আলা আউলিয়ায়িকা। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হিরমানি ওয়াল মুসিবাতি কি দীনি ইয়া আরহামার রাহিমিন।
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে এখানে পৌছিয়েছে নিরাপদে ও সুস্থতার সাথে। হে আল্লাহ! আমি মিনায় হাজির। আমি আপনার গোলাম এবং আপনার কবজায়। মিনতি এই যে, আমার ওপর সেই দয়া করেন, যা আপনার প্রিয় বান্দাদের ওপর করে থাকেন। হে আল্লাহ! আপনার কাছে আশ্রয় চাই বঞ্চনা থেকে এবং দানের ক্ষেত্রে পরীক্ষা থেকে, হে সর্বোচ্চ দয়ালু।
জামরায়ে আকাবায় প্রথমবার কঙ্কর নিক্ষেপের সময় তালবিয়া বন্ধ করে দেবে। এখন থেকে তাকবির বলা শুরু করবে। প্রতিটি কঙ্কর নিক্ষেপের সময় তাকবির বলবে। এ স্থানে দুআর জন্য অবস্থান করা সুন্নাত নয়। কোরবানির পশু সঙ্গে থাকলে তা নহর করবে বা জবাই করবে। নহর বা জবাইয়ের সময় এ দুআ পড়া মুসতাহাব-
بسم الله وَاللهُ أَكْبَرُ، اللَّهُمَّ صَلَّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِهِ وَسَلَّمَ، اللَّهُمَّ مِنْكَ وَإِلَيْكَ، تَقَبَّلْ مِنِّي.
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাল্লিম। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া ইলাইকা, তাকাব্বাল মিন্নি।
অর্থ: আল্লাহর নামে জবাই করলাম, তিনি মহান। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার পরিবারের ওপর শান্তি ও রহমত বর্ষণ করুন। হে আল্লাহ! (এই কুরবানি) আপনার দেওয়া এবং আপনার জন্যই উৎসর্গীত। আমার তরফে কবুল করুন। -আর অন্যের পক্ষ থেকে কুরবানি করলে বলবে- 'তাকাব্বাল মিন ফুলান: অমুকের। ব্যক্তির নাম নেবে) পক্ষ থেকে কবুল করুন]
জবাইয়ের পর যখন হলক করবে, তখন আমাদের শাফেয়িদের মতে, মাথার সামনের ভাগের চুল ধরে তিনবার তাকবির বলার পর এ দুআটি পড় মুসতাহাব। দুআটি হল-
الحمدُ لِلَّهِ عَلَى مَا هَدَانَا، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى مَا أَنْعَمَ بِهِ عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ هَذِهِ نَاصِيَتِي فَتَقَبَّلْ مِنّي وَاغْفِرْ لِي ذُنُونِي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَلِلْمُحَلَقِينَ وَالْمُقْصِرِينَ، يَا وَاسَعَ الْمَغْفِرَةِ آمِينَ.
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহি আলা মা হাদানা, ওয়ালহামদুলিল্লাহি আলা মা আনআমা বিহি আলাইনা। আল্লাহুম্মা হাজিহি নাসিয়াতি ফাতাকাব্বাল মিন্নি। ওয়াগফির লি জুনুবি। আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়ালিল মুহাল্লিকিনা ওয়াল জুকাসসিরিনা ইয়া ওয়াসিআল মাগফিরাহ, আমিন।
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর এজন্য যে, তিনি আমাদেরকে পথপ্রদর্শন করেছেন। আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা এ কারণে যে, তিনি এর মাধ্যমে আমাদের ওপর করেছেন। হে আল্লাহ! এই আমার মুন্ডানো, আমার থেকে কবুল করুন এবং আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আমাকে এবং মুণ্ডনকারী ও হ্রস্বকারীদের ক্ষমা করুন হে বড় ক্ষমাশীল। (আমিন) মাথা মুণ্ডানো শেষ হলে বলে এ দুআ পড়বে-
الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي قَضَى عَنَّا نُسُكَنَا ، اللَّهُمَّ زِدْنَا إِيْمَانًا وَبَقيْنَا وَعَوْنًا، وَاغْفِرْ لَنَا وَلَآبَائِنَا وَأُمَّهَاتِنَا وَالْمُسْلِمِينَ أَجْمَعِينَ.
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি কাদা আন্না নুসুকানা, আল্লাহুম্মা জিদনা ঈমানান ওয়া ইয়াকিনান ওয়া আওনান, ওয়াগফির লানা ওয়ালি আবয়িনা ওয়া বাকিনা আওনান ওয়াগফিরলানা আওলা আবায়িনা ওয়া উম্মাহাতিনা ওয়াল মুসলিমিনা আজমায়িন।
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে হজের আনুষ্ঠানিকতা আদায়ের তাওফিক দিয়েছেন। হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান, বিশ্বাস ও সাহায্য বাড়িয়ে দিন। আমাদেরকে এবং আমাদের মাতা-পিতা সবাইকে ক্ষমা করুন।
আইয়ামে তাশরিকে মিনায় অবস্থানকালে যে দুআ পড়বে
হজরত নুবাইশা রাযি. থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি আসাল্লাম বলেন-
أَيَّامُ التَّشْرِيقِ أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ.
অর্থ: আইয়ামে তাশরিক হল পানাহার ও জিকিরের দিন।
তাই এ সময় বেশি বেশি জিকির করা চাই। সর্বোত্তম জিকির হল, কুরআন সুন্নাত হল, কঙ্কর নিক্ষেপের দিনগুলোর প্রতিদিন কঙ্কর নিক্ষেপের সময় যামারায়ে উলার কাছে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহর প্রশংসা করবে, তাকবির বলবে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে, তাসবিহ বলবে এবং কাকুতি মিনতির সাথে দুআ করবে। এভাবে সুরা বাকারা পড়ার সমপরিমাণ দাঁড়াবে। অনুরূপভাবে দ্বিতীয় যামারায় করবে। তবে তৃতীয় জামারায় দাঁড়াবে না, একে যামারায়ে আকবা বলে।
মিনা থেকে ফিরে আসা
মিনা থেকে ফিরে আসার পর হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়ে গেল। এখন মূল হজের কোনো জিকির অবশিষ্ট নেই। তবে সে যেহেতু মুসাফির তাই তাকবির, কালিমা ইত্যাদি জিকির-আজকার করবে।
মক্কায় প্রবেশের পর উমরার নিয়ত করলে উমরায় হজের যেসব আমল রয়েছে সেগুলোতে হজের দুআ-দরূদ ও জিকিরগুলোই করবে। যেমন, ইহরাম, তাওয়াফ, সায়ি, পশু জবাই ও উটের হলক।
সহিহ মুসলিম: ১১৪১
জমজমের পানি পান করার দুআ
হজরত জাবের রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
অর্থ: জমজমের পানি যে উদ্দেশ্যে পান করা হয়, আল্লাহ তাআলা সে উদ্দেশ্য পূরণ করেন। ৫২৭ উলামায়ে কেরাম মহান উদ্দেশ্যে জমজমের পানি পান করেছেন এবং তাদের উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়েছে। উলামায়ে কেরাম বলেন, ক্ষমা বা সুস্থতার জন্য যে পানি পান করবে সে এ দুআ পড়বে-
৫২৭. মুসনাদে আহমাদ: ৩/৩৫৭, সুনানে ইবনে মাজাহঃ ৩০৬৩, আল ফুতুহাত: ৫/২৮
মক্কা থেকে ফিরে যাওয়ার সময় করণীয় মক্কা থেকে ফিরে যাওয়ার সময় বিদায়ী তাওয়াফ করবে। মুলতাজিমে এসে মুলতাজিমকে জড়িয়ে ধরে এ দুআ পড়বে-
যদি কেউ তাকে সালাম পাঠানোর উসিয়ত করে থাকে তাহলে এভাবে বলতে হবে-
এরপর এক গজ পরিমাণ ডানদিকে গিয়ে হজরত আবু বকর রাযি. কে সালাম দেবে। এরপর আরেক গজ পরিমাণ পিছিয়ে হজরত উমর রাযি. কে সালাম দেবে। অতঃপর প্রথম স্থানে চলে আসবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনাসামনি দাঁড়িয়ে তাঁকে নিজের জন্য ওসিলা বানাবে। তাকে সুপারিশকারী বানাবে রবের কাছে।
৪৯২. হজরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
মদিনা থেকে বের হওয়ার সময় ও সফর থেকে ফিরে যাওয়ার সময় দুই রাকাত সালাতুল বিদা পড়া মুসতাহাব। এরপর যা ইচ্ছ্যে দুআ করবে। এরপর কবরের কাছে আসবে। আগের মতো সালাম করবে। আগের দুআগুলো পড়বে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে এই বলে বিদায় নেবে-
অর্থ: হে আল্লাহ এ সফরকে আপনার রাসুলের হারামের জন্য শেষ সফর বানাবেন না। আমার জন্য হারামাইনে বারবার আসার পথ সহজ করে দিন। সহজ করে দিন আপনার ও অনুগ্রহে এ জায়গায় আসার পথ। আমাকে উভয় জাহানে ক্ষমা ও দান করুন। আমাদেরকে ঘরে ফেরান সুস্থতা ও কৃতকার্যতা ও নিরাপদে।
এখানেই হজের আলোচনা এখানে শেষ হল। যদিও এই কিতাবের কলেবর অনুযায়ী দীর্ঘ; কিন্তু আমি এ সম্পর্কে যে আলোচনা করতে চাই তা এ তুলনায় খুবই সংক্ষিপ্ত। আল্লাহর কাছে আমরা তাঁর আনুগত্যের জন্য তাওফিক করি এবং তিনি যেন জান্নাতে আমাদের ভাইদের সঙ্গে আমাদেরকে একসঙ্গে করেন।
হজরত উতাবি রহ. বলেন, আমি নবীজির কবরের পাশে বসা ছিলাম। এ সময় একজন গ্রাম্য বেদুইন লোক এসে বলল- আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ (শান্তি বর্ষিত হোক আপনার ওপর হে আল্লাহর রাসুল।) মহান বলেছেন- 'যদি তোমরা নিজের ওপর জুলুম করে থাক আর নবীজির কাছে এসে একবার তোমরা নিজেরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং রাসুলও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তাহলে অবশ্যই তারা তাওবা কবুলকারী ও দয়ালু হিসাবেই পাবেন।
এজন্য আমি আমার পাপের ক্ষমা চাওয়ার জন্য, রবের কাছে আপনার মাধ্যমে শাফাআত লাভের আশায় এসেছি। এরপর নিম্নোক্ত কবিতা পড়েন-
يَا خَيْرَ مَنْ دُفِنَتْ بِالْقَاعِ أَعْظَمُهُ فَطَابَ مِنْ طَيْبِهِنَّ الْقَاعُ وَالْأَكَمُ نَفْسِي الْفِدَاءُ لِقَبْرِ أَنْتَ سَاكِنُهُ فِيهِ الْعَفَافُ وَفِيهِ الْجُودُ وَالْكَرَمُ.
উচ্চারণ: ইয়া খাইরা মান দুফিনাত বিলকাআয়ি আ'জামুহু ফা তাবা মিন তায়্যিবিহিন্না কা'উ ওয়াল আকাম। নাফসিল ফিদা'উ লিকাবরিন আনতা সাকিনুহু, ফিহিল আফাফু ওয়া ফিহিল জুদু ওয়াল কারামু।
অর্থ: হে ওই মহান, যাকে মহান স্থানে দাফন করা হয়েছে। যার সুগন্ধিতে সমস্ত তলদেশ ও পাহাড়-পর্বত সুগন্ধিত। ওই কবরের জন্য আমার প্রাণবাজি! যে কবরে আপনি রয়েছেন। যাতে রয়েছে ক্ষমা, বদান্যতা ও দানশীলতা। উতাবি রহ. বলেন, এরপর সে গ্রাম্য লোকটি চলে গেল। তখন আমার চোখে ঘুম চেপে এলো। আমি ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখি। তিনি বলছেন, হে উতাবি, তুমি গ্রাম্য লোকটিকে সুসংবাদ দাও যে, আল্লাহ তাকে মাফ করে দিয়েছেন।
সুরা নিসা: ৬৪
আরো পড়ুন......
হজ্জের দিন সমুহে পঠিত দোয়া সমুহ ও জরুরি মাসায়িল