চাঁদের অর্ধেক বা পুরোটা দেখার পর দুআ
৪৭৩. হজরত তালহা বিন উবাইদুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাঁদ দেখে এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ أَهْلِلْهُ عَلَيْنَا بِالْيُمْنِ وَالْإِيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ، رَبِّي وَرَبُّكَ الله
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আহলিলহু আলাইনা বিল ইউমনা ওয়াল ঈমানি ওয়াসসালামাতি ওয়াল ইসলামি, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ্। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য এই চাঁদকে সৌভাগ্য ও ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদিত করুন। আল্লাহ হলেন আমার ও তোমার রব।
ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান।৫০৭
৫০৭.সুনানে তিরমিজি: ৩৪৪৭, সুনানে দারিমি: ১৬৯৫
৪২৪ আল-আযকার !!!!!!
৪৭৪. হজরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম নতুন চাঁদ দেখে এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيْمَانِ، وَالسَّلَامَةِ وَالْإِسْلَامِ وَالتَّوْفِيقِ لِمَا يُحِبُّ رَبُّنَا وَيَرْضَى رَبُّنَا وَرَبُّكَ اللهُ.
উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলামি ওয়াত্তাওফিকি লিমা তুহিব্বু ওয়া তারদা, রাব্বুনা ওয়া রাব্বুকাল্লাহ। অর্থ: আল্লাহ সবচেয়ে বড়। হে আল্লাহ! আপনি নতুন চাঁদকে আমাদের জন্য নিরাপদ, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদয় করুন। এবং আপনার পছন্দমাফিক কাজ করার তাওফিক দিন। হে চাঁদ, আল্লাহ আমাদের ও তোমার রব। ৫০৮ ৪৭৫. হজরত কাতাদাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নতুন চাঁদ দেখতেন, তখন এ দুআটি তিনবার পড়তেন-
هِلَالُ خَيْرٍ وَرُشْدٍ هِلَالُ خَيْرٍ وَرُشْدٍ هِلَالٍ خَيْرٍ وَرُشْدٍ، آمَنْتُ بِالَّذِي خَلَقَكَ.
উচ্চারণ: হিলালু খাইরিন ওয়া রুশদিন, হিলালু খাইরিন ওয়া রুশদিন, হিলালুখাইরিন ওয়া রুশদিন, আমানতু বিল্লাজি খালাকাক। মামাকে অর্থ : কল্যাণ ও আলোর চাঁদ, কল্যাণ ও আলোর চাঁদ, কল্যাণ ও আলোর চাঁদ। আমি তোমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর ওপর ঈমান আনলাম। -এরপর বলতেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي ذَهَبَ بِشَهْرٍ كَذَا، وَجَاءَ بِشَهْرٍ كَذَا
উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি জাহাবা বিশাহরি কাজা ওয়া যাআ বিশাহরি কাজা। অর্থ: প্রশংসা ওই মহান সত্তার যিনি ওই (মাসের নাম নেবে) মাসটি ৫০৮. সুনানে দারিমি: ১৬৯৬
আল-আযকায় ৪২৫
বিদায় করেছেন এবং এ মাসটি (মাসের নাম নেবে) কে পাঠিয়েছেন।৫০৯ অন্য বর্ণনায় আছে, কাতাদা রাযি. বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নতুন চাঁদ দেখতেন, তখন তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতেন ।৫১০
৪৭৬. হজরত আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত ধরলেন, তখন চাঁদ উঠেছিল। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও। এই অন্ধকার রাতের যখন তা সবকিছুকে আচ্ছন্ন করে ফেলে, এর অকল্যাণ থেকে।৫১৯
৪৭৭. হজরত আনাস রাযিযাল্লাহু তায়ালা আনহু এর সূত্রে দুর্বল সনদে বর্ণিত, রজব মাস এলে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিচের দুআটি পড়তেন-
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبَ وَشَعْبَانَ وَبَلَّغْنَا رَمَضَانَ.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি রজব, শাবান মাসে আমাদেরকে বরকত দিন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন। ৫১২ ৫০৯. সুনানে আবু দাউদ: ৫০৯২
৫১০ সুনানে আবু দাউদ: ৫০৯৩ ৫১১. মুসনাদে আহমাদ: ৬/৬১ ৫১২ হিলইয়া: ৬/২৬৯
১৫ছে জীবন বা ৪০৬
৫২৬
আল-আযকার
রোজার মাসে যেসব দুজা পড়তে হয়
মুখে ও মনে একই সঙ্গে দুজা করা মুসতাহাব। যেমন অন্যান্য ইবাদতের ক্ষেত্রে মুসতাহাব। যদি শুধু মনে মনে নিয়ত করে তাহলেও চলবে। তবে যদি শুধু কেউ মুখে নিয়ত করে অন্তরে না থাকে তাহলে নিয়ত হবে না। কেউ গালিগালাজ করলে তাকে বলে দেবে আমি রোজাদার।
৪৭৮. হজরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রোজা হল ঢাল স্বরূপ। রোজাদার যেন কাউকে গালি না দেয়, অশালীন কোনো কাজ না করে। কেউ যদি তাকে গালি দেয় বা ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে আমি রোজাদার। এটা যেন দুইবার বলে। ৫১৩
ইমাম নববি রহ. বলেন, কোনো কোনো উলামায়ে কেরাম বলেন যে, বাক্যটি মুখে বলবে এবং গালিদাতাকে শুনিয়ে বলবে। যেন সে এসব থেকে বিরত হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ বলেছেন, আস্তে আস্তে বলবে। তবে শুনিয়ে বলাটাই বিশুদ্ধ।
৪৭৯. হজরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির দুআ অনর্থ হয় না। রোজাদারের দুআ ইফতার করা পর্যন্ত, নেককার বাদশাহর দুআ এবং মজলুম ব্যক্তির দুআ। -তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান।**
ইফতারের সময় যে দুআ পড়বে
৪৮০. হজরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন এদুআ পড়তেন-
ذَهَبَ الظَّمَأُ، وَابْتَلَتِ الْعُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى.
৫১৩. সহিহ বুখারি: ১৮৯৪
৫১৪. সুনানে নাসায়ি: ৪/১৬২
||||||||| আল-আযকার
৪২৭
উচ্চারণ : জাহাবাজ জমাউ ওয়াব তাল্লাতিল উরুকু ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহু তাআলা। অর্থ: তৃষ্ণা নিবারণ হয়েছে, রগ-পেশীগুলো ভিজেছে এবং সওয়াব সাব্যস্ত হয়েছে ইনশাআল্লাহ।৫১৫ ৪৮১. মুআজ বিন জুহরা থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন এ দুআ পড়তেন-
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ، وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু। অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার নামে রোজা রেখেছি। আপনার প্রদত্ত রিজিক দিয়ে ইফতার করেছি। ৫১৬ বিন জুহুরা রহ. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতারের সময় নিম্নোক্ত দুআ পড়তেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَعَانَنِي فَصُمْتُ، وَرَزَقَنِي فَأَفْطَرْتُ.
উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা হিল্লাজি আআনানি ফা-সুমতু ওয়া রাজাকানি ফা- আফতারতু। অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি আমাকে রোজা রাখার তাওফিক বল দিয়েছেন, তাই আমি রোজা রেখেছি। যিনি আমাকে রিজিক দিয়েছেন, ফলে হয় আমি তাঁর রিজিক দিয়ে ইফতার প করেছি। ৫১৭ ৪৮৩. হজরত ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতার করে নিম্নোক্ত দুআ পড়তেন-
৫১৫. সুনানে তিরমিজি: ৩৫৯২
৫১৬. সুনানে আবু দাউদ: ২৩৫৭
৫১৭. সুনানে আবু দাউদ: ২৩৫৭
৪২৮
আল-আযকার
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْنَا، وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْنَا فَتَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা সুমনা ওয়া আলা রিজকিকা আফতারনা, ফাতাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলিম। অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা আপনার জন্য রোজা রেখেছি। আপনার প্রদত্ত রিজিক দিয়ে ইফতার করেছি। আপনি তা কবুল করেন, নিশ্চয় আপনি সবকিছু শ্রবণ করেন এবং সবকিছু জানেন। ৫১৮ ৪৮৪. হজরত আমর বিন আস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি-
إِنَّ لِلصَّائِمِ عِنْدَ فِطْرِهِ لَدَعْوَةُ مَا تُرَدُّ.
অর্থ: ইফতারের সময় রোজাদারের দুআ কবুল করা হয়। ইবনে আবু মুলাইকা রহ. বলেন, আমি আবদুল্লাহ বিন আমর রাযি. কে ইফতারের সময় এ দুআ পড়তে শুনেছি--
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ أَن تَغْفِرَ لِي.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বি রাহমাতিকাল্লাতি ওয়াসিআত কুল্লা শাইয়িন আন তাগফিরালি। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সেই রহমতের অসিলায় কামনা করি। যা সকল বস্তুকে বেষ্টনকারী যে, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।৫১৯ ৫১৮. ইবনুস সুন্নি: ৪৭৯
৫১৯.সুনানে আবু দাউদ: ৩৫৮৪
আল-আযকার ৪২৯
কারও মেহমান হয়ে ইফতারি করলে যে দুআ পড়বে ৪৮৫. হজরত আনাস রাযি. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদ বিন উবাদা রাযি.-এর কাছে গেলেন। তখন সাদ রাযি. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে রুটি ও কিশমিশ পেশ করলেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা খেলেন। খাওয়ার পর বললেন-
عِندَكُمُ الصَّائِمُوْنَ، وَأَكَلَ طَعَامَكُمُ الْأَبْرَارُ، وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ الْمَلَائِكَةُ.
উচ্চারণ : আফতারা ইনদাকুমুস সাইমুনা, ওয়া আকালা তাআমাকুল আবরারু, ওয়া সাল্লাত আলাইকুমুল মালাইকা। অর্থ: তোমাদের কাছে রোজাদারগণ ইফতার করুক। নেককার লোকজন তোমাদের খাবার গ্রহণ করুক। আর ফেরেশতারা তোমাদের জন্য প্রার্থনা করুক ।৫২০ ৪৮৬. হজরত আনাস রাযি.-এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারো কাছে ইফতার করলে নিচের উল্লেখিত দুআটি পড়তেন-
أَفْطَرَ عِنْدَكُمُ الصَّائِمُوْنَ، وَأَكَلَ طَعَامَكُمُ الْأَبْرَارُ، وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ الْمَلَائِكَةُ.
উচ্চারণ : আফতারা ইনদাকুমুস সা-য়িমুনা, ওয়া আকালা তাআমা কুমুল আবরারু, ওয়া সাল্লাত আলাইকুমুল মালাইকা। অর্থ : তোমাদের কাছে রোজাদারগণ ইফতার করুক। নেককার লোকজন তোমাদের খাবার গ্রহণ করুক। আর ফেরেশতারা তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুক। ৫২১ ৫২০, ইবনুস সুন্নি: ৪৮১ ৫২১. ইবনুস সুন্নি: ৪৮৩
১৩০
লাইলাতুল কদরে যে দুআ করবে
৪৮৭. হজরত আয়েশা রাযি. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমি যদি লাইলাতুল কদর পাই, তাহলে কী দুআ পড়ব? নবীজি বললেন, তুমি এই দুআ পড়বে-
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মমা ইন্নাকা আফুয্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাআকু আন্নি। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি তো ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমাকে ভালোবাসেন। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, হাদিসটি হাসান সহিহ। ৫২২ উলামায়ে কেরাম বলেন, এইদুআটি বেশি বেশি পড়া চাই। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করবে এবং গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পেছনে যেসব দুআ ও জিকির-আজকার করার কথা বলা হয়েছে সেগুলোও পড়বে।
ইমাম শাফেয়িরহ. বলেন, লাইলাতুল কদরে যেমন যেমন বেশি বেশি আমল করা চাই, দিনেও তেমন বেশি বেশি আমল করা চাই।হাজ
শবে কদরে মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বেশি দুআ করা মুসতাহাব। এটি নেককার ও আল্লাহওয়ালা বান্দাদের নিদর্শন।
ইতেকাফ অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত ও অন্যান্য জিকির বেশি বেশি করবে।
৫২২. সুনানে তিরমিজি: ৩৫০৮